নিয়ম বহির্ভূতভাবে মান করনীক থেকে বন্ডেট ওয়ার হাউজের এজেন্ট, কেরুজ যশোর ওয়ার হাউজের এজেন্ট দাউদ আলীর নেই প্রশিক্ষন
- আপডেট সময় : ০৪:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫ ৭৬ বার পড়া হয়েছে
শাপলা নিউজ প্রতিবেদক: মামা খুটি কিছুই নয়, শুধু মাত্র টাকার জোরে মান করনীক থেকে বন্ডেট ওয়ার হাউজের এজেন্ট বনে যাওয়া দাউদ আলীর বিরুদ্ধে উঠেছে নানান অভিযোগ। নিয়ম বহির্ভূতভাবে একের পর এক ওয়ার হাউজের ইনচার্জের দায়িত্ব পেলেও সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন ভাড়াটিয়া দিয়ে। দাউদ আলীর যেমন দায়িত্ব পালন করেননি কোন হাউজের সহকারি পদে, তেমনি নেই কোন প্রশিক্ষন। ফলে অযোগ্য ব্যাক্তি কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ হাউজের ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অভিযোগ উঠেছে, দাউদ আলী ১৯৮৬ সালের ১ ডিসেম্বরে কেরুজ চিনিকলের চিনি কারখানার প্রকৌশলী বিভাগের হেলপার পদে যোগদান করেন। পরে ডিস্টিলারী বিভাগের ম্যাসেঞ্জার পদেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ সালের ১৫ জুনে পদন্নোতি পেয়ে ওই বিভাগেরই মান করণীক/মান পরিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। গুঞ্জন রয়েছে ৮ম শ্রেনী পাসের সনদপত্রের মাধ্যমে চাকুরি জীবন শুরু করলেও মান করনীক পদে তাকে জমা দিতে হয় এসএসসি পাসের সনদপত্র। এক পর্যায়ে দাউদ আলী ফ্যাসিবাদ সরকারের ক্ষমতাশীন সংসদ সদস্য, ততকালীন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ, কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়নের পদস্থ নেতৃবৃন্দ সহ চিনিকলের কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে বরিশাল ওয়ার হাউজে ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জের দায়িত্ব পান। সে সময় দাউদ আলী কোন কোন ব্যাক্তির কাছে বলেও বেড়িয়েছেন ৩৫ লাখ টাকায় ওই হাউজের দায়িত্ব কিনেছি। পরবর্তিতে মোটা অংকের টাকায় তিনি ফরিদপুর হাউজ পছন্দ করে নেন। ওই হাউজে নিজের মতো সুবিধা না হওয়া ততকালীন সৈরাচার সরকারের একজন মন্ত্রীকে ৭ লাখ, জনৈক এমপিকে ২২ লাখ ও একজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে ফরিদপুর থেকে যশোর ওয়ার হাউজের দায়িত্ব নেন। জানা গেছে, ১৯০৫ সালের বৃষ্টিশ আইনুযায়ি একজন বন্ডেট ওয়ার হাউজের ইনচার্জ পদ পেতে হলে তাকে কমপক্ষে ২ বছরের সহকারি হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ছাড়া প্রশিক্ষন থাকতে হবে ৬ মাসের। অভিযোগ রয়েছে দাউদ আলীর অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষন কোনটিই নেই। নেই মামা-খালু বা খুটির জোরও। শুধুমাত্র অবৈধ উপায়ে উপার্জনকৃত কাড়ি কাড়ি টাকার বিনিময়ে একের পর এক ওয়ার হাউজের ইনচার্জের পদ দখল করেছেন। ফরিদপুর যেমন অবসরপ্রাপ্ত জনৈক এ্যাজেন্টকে দিয়ে ভাড়ায় পরিচালিত করেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে যশোর হাউজেও ভাড়াটিয়া রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত এ্যাজেন্ট আতিয়ার রহমান। আতিয়ার রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ভূয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত। অথচ আতিয়ার রহমানকে দিয়েই তিনি যশোর ওয়ার হাউজের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন, এ যেন দেখার কেউ নেই। দর্শনার ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এ নেতার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্টের পর ২ টি মামলাও দায়ের হয়েছে আদালতে। এ ছাড়া গত ৫ আগষ্ট দাউদ আলীর কেরুজ আনন্দ বাজারের কথিত অফিসে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় তার অফিসে মেলে কেরুজ উৎপাদিত ফরেণ লিকারের প্রায় ৪ হাজার লেভেল। যা অবৈধভাবে রক্ষিত ছিলো দাউদ আলীর অফিসে। ডিস্টিলারীর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের ডিও সানোয়ার হোসেন সে সময় ঘটনাস্থলে পৌছে লেভেলগুলো জব্দ করেন। অভিযোগ উঠেছে কাগজ-কলমে আড়াই হাজার লেভেল জব্দ দেখানো হলেও তার বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কে কি কারণে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে সানোয়ার হোসেন জানান, দাউদ আলী ডিস্টিলারী বিভাগের ফরেণ লিকারের বোতল ও লেভেল পরিবেশক ছিলেন। যে কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ দিকে ডিস্টিলারী বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গত ৬/৭ বছরে শুনিনি দাউদ আলী লেভেলের পরিবেশক ছিলেন। তাছাড়া কোন পরিবেশকও তার অফিস কক্ষে এত পরিমান লেভেল মজুত রাখতে পারেনা আইনগতভাবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের চাকরী জীবি ওই প্রতিষ্ঠানের পরিবেশক কিভাবে হয় ? এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক শিরিন আক্তার বলেন, ঘটনাটা যেহেতু বেশ আগের, তাছাড়া আমি প্রথম শুনলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। কেরুজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান জানান, সেসময় আমি এ মিলে ছিলামনা। থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতাম। এ ছাড়াও দাউদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি বহিরাগত এক যুবককে দিয়েও হাউজের গোপনীয় কাগজপত্রের কাজ করিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। অফিসের গোপনীয় কাগজ-পত্রের কার্যক্রম বহিরাগত দিয়ে করানোতেও উঠেছে প্রশ্ন। সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখে দাউদ আলীর বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসানের সুদৃষ্টি কামনা করেছে এলাকাবাসী।।