সার সংকটের নাকাল প্রান্তিক চাষীরা।।কর্তৃপক্ষ বলছেন- সিন্ডিকেট থাকতে পারে, তবে সার সংকট নেই।
- আপডেট সময় : ০৭:০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫ ২৭৯ বার পড়া হয়েছে
পর্ব ১
শাপলা নিউজ ডেস্কঃ
চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর অঞ্চলে দেখা দিয়েছে ভরা মৌসুমে সার সংকট। এতে বিপাকে পড়ছেন প্রান্তিক চাষীরা। সরকারের কাছে যা মজুত আছে, তা চাহিদার তুলনায় কম। এমনই দাবি করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জৈষ্ঠ কর্মকর্তারা।তারা আরো জানান, সরবরাহ ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকলেও তেমন সার সংকট নেই। অন্তবর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে বিশেষ একটি চক্র সিন্ডিকেট তৈরি করে সার নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, দেশের পশ্চিম অঞ্চলের চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলার জমিতে চাষ হচ্ছে কুমড়া,পাট,আখ,ধনেপাতা,ধান। চলতি ভরা মৌসুমে সার সংকটে স্বস্তিতে নেই চাষীরা।ডিসেম্বর থেকে আগষ্ট মাস পর্যন্ত সারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায়।
কৃষকদের অভিযোগ, সরবরাহ কমার অজুহাতে সব ধরনের সারের দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও ডিলাররা। এতে বেড়েছে খরচ। আবার বেশি টাকা দিয়েও সময় মতো মিলছে না সার। বিসিআইসি ডিলারদের কাছে থেকে বিশেষ করে টি এস পি ও ড্যাপ স্যার না ঠিক মত না মিললেও গ্রাম গঞ্জের ফড়িয়াল খুচরা সার ব্যবসায়ীদের কাছে সব সারই পাওয়া যাচ্ছে।তবে,দাম বস্তা প্রতি ৪ টাকা বেশি নিচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার কয়েকজন খুচরা সার ব্যবসায়ী (যাদের নামের প্রথম অক্ষর এ,র,ম,চ) জানায়,তারা অনেক দূর থেকে বস্তা প্রতি ৩ শ টাকা বেশি দিয়ে টিএসপি,ড্যাপ সার কিনে এনে ১৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।চাষীদের প্রয়োজন মিটাতে বিভিন্ন জায়গা থেকে সার নিয়ে আনছি।
চুয়াডাঙ্গা দর্শনার কৃষক বলেন, এক দোকানে চাচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। আরেক দোকানে ১ হাজার ৭৩০ টাকা বস্তা। একই জিনিস, দাম ভিন্ন। সার পাচ্ছি না সার দেবো কিভাবে?
আমদানির জন্য মূল্য পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় বেশ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান সার সরবরাহ করেনি বলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোশে সুযোগ নিচ্ছে সিন্ডিকেট। যার দোষ পড়ছে ডিলার ও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে।
ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখানে সিন্ডিকেশন থাকতে পারে অথবা অন্যান্য কারসাজি থাকতে পারে। সাপ্লাই চেইনকে অন্যভাবে তদারকি করার প্রয়োজন আছে। এখানে কঠোর আইনের প্রয়োগেরও প্রয়োজন হতে পারে। কেউ যদি সিন্ডিকেশন করে বিশেষ ক্ষমতা আইন আছে, ভোক্তা অধিকার আইন আছে। এগুলো প্রয়োগ করে কৃষকের কাছে সার পৌঁছে দিতে হবে এবং সেটা সঠিক মূল্যে। শুধু পৌঁছালেই হবে না সারের মূল্যটাও যেনো যথাযথ থাকে।
তবে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, কিছু এলাকায় সমস্যা হলেও সামগ্রিকভাবে সারের ঘাটতি নেই। সিন্ডিকেটের কারসাজি রোধে কাজ চলছে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট কাজ করছে এটা আসলে চিহ্নিত করা একটু কঠিন। তবে মনিটরিং আমরা জোরদার করতে পারি। কৃষকের হাতে যদি আমরা সারটা পৌঁছে দিতে পারি আসলেই যারা কৃষিকাজটা করে, এবং এটা আমরা উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি।
দেশে রাসায়নিক সারের ৭০ শতাংশেরও বেশি ব্যবহৃত হয় বোরো ও রবি মৌসুমে। সময়মতো সার না পেলে খাদ্য সংকটের শঙ্কা থাকবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।